ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আবারও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩৪০ ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে বহু নারী ও শিশুও রয়েছে। যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল এই আক্রমণ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুধু গাজার উত্তরাঞ্চলেই প্রাণ গেছে অন্তত ১৫৪ জনের। এছাড়া কেন্দ্রীয় এলাকায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ অনেক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলকে এই আক্রমণের জন্য সরাসরি দায়ী করেছে। হামাসের দাবি, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। হামাস বলেছে, “গাজার নিরস্ত্র জনগণের ওপর বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ হামলা চালিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করেছে ইসরায়েল।”

একই অভিযোগ তুলেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ। তারা বলছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে শান্তি চুক্তি ভঙ্গ করে নির্বিচারে বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে।

এদিকে, ইসরায়েলের এক সামরিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এই হামলা শুধু বিমান হামলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং স্থল অভিযানও চালানো হতে পারে। তার ভাষায়, “যতদিন প্রয়োজন, ততদিন এই হামলা চলবে, এবং এটি আরও বিস্তৃত হতে পারে।”

এটি গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরায়েলি সেনাদের স্থল অভিযানের ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

গাজায় চলমান এই হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছে হামাস। তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করা যায়। একইসঙ্গে আরব লীগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কে গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে হামাস।

এদিকে, ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা বাড়ায় সাধারণ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভয়, আতঙ্ক ও চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা না হলে ফিলিস্তিনিদের মানবিক পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।