আবরার ফাহাদ হত্যার রায়ের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তার ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ দ্রুততম সময়ে দণ্ড কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমির পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ছয় মাস পর প্রকাশ্যে এলো কেন এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি ।

আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে রায় ঘোষণার পর আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ ও ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এ বিষয়ে কথা বলেন। ফাইয়াজ বলেন, ‘আমরা চাই, এই রায় যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়।’

২০২৩ সালের ৬ আগস্ট কারাগার থেকে পালিয়ে যান মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি। বিষয়টি জানাজানি হয় ছয় মাস পর। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফাইয়াজ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর অনেকেই পালিয়েছে, কিন্তু একজন প্রধান আসামি, যিনি আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন, তার পালিয়ে যাওয়ার খবর এত দেরিতে জানানো হলো কেন? এটা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় হাইকোর্ট আজ ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছে। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আবরার ফাইয়াজ বলেন, ‘এক বছর আগেও আমরা কল্পনা করতে পারিনি যে এত বড় একটি রায় আসবে। তবে ৫ আগস্টের ঘটনার পর যেভাবে পরিস্থিতি বদলেছে, তাতে এটা সম্ভব হয়েছে।’

ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে ফাইয়াজ বলেন, ‘ছাত্রসংগঠনগুলো এ বিষয়ে কথা বলতে পারে, তবে আমরা চাই, আমার ভাইয়ের মতো আর কোনো শিক্ষার্থী যেন এমন পরিণতির শিকার না হয়। এ জন্য সরকার ও ছাত্রসংগঠনগুলোর যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ আদালতের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘এই রায় যেন ভবিষ্যতে আর কোনো আবরার হত্যার ঘটনা না ঘটে, সেই দৃষ্টান্ত তৈরি করে। একই সঙ্গে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে র‍্যাগিংমুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে শিক্ষার্থীরা ভয় ও নির্যাতন ছাড়া পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।’

এদিকে কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়ি থেকে আবরারের মা রোকেয়া খাতুন প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমার মতো আর কোনো মা যেন তার সন্তানকে হারাতে না হয়। আমি চাই, দ্রুত এই রায় কার্যকর হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কাজ করার সাহস না পায়।’

আবরার ফাহাদকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান তার বাবা বরকতউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে জীবন দিয়ে সত্যের পক্ষে লড়াই করেছে, তার আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়।’